জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের সার্চ কোয়ালিটি টিমের পরিচালক পিটার নরভিগ পাইথন সম্পর্কে বলেন-

শুরু থেকেই গুগলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে পাইথনের ব্যবহার হয়ে আসছে এবং গুগল সিস্টেমের উন্নয়ন ও বিস্তরের ফলে এর চাহিদা আরও বাড়ছে। বর্তমানে গুগলের ডজনখানেক ইঞ্জিনিয়ার পাইথন ব্যবহার করেন এবং এই ভাষায় দক্ষ ব্যক্তিদের আমরা খুঁজছি।

পাইথন কী? 

পাইথন মানে অজগর, ঠিক আছে। কিন্তু এই আর্টিকেলে আমরা যে পাইথন নিয়ে কথা বলছি তা হলো, একটা অবজেক্ট-অরিয়েন্টেড হাই-লেভেল ল্যাঙ্গুয়েজ। ১৯৯১ সালে প্রখ্যাত ডাচ (নেদারল্যান্ডসের নাগরিক) কম্পিউটার প্রোগ্রামার গুইডো ভ্যান রস্যিউম (Guido van Rossum) এটি প্রথম (ভার্সন ০.৯.০) প্রকাশ করেন। আর মোটেই এটি অজগরের নামে নামকরণ করা হয়নি; বরং মন্টি পাইথন ফ্লাইং সার্কাসের নামে এর নামকরণ করা হয়েছে। পাইথন গুরুর ভাষায় ভাষায়—

আজ থেকে প্রায় ছয় বছর আগে, ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বর মাসে, ক্রিসমাসের সপ্তাহব্যাপী ছুটিতে একটি প্রোগ্রামিং প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছিলাম। আমার অফিস বন্ধ থাকবে। বাসায় একটি কম্পিউটার আছে, কিন্তু সময় কাটানোর মতো হাতে কোনো কাজ নেই। সুতরাং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম একটি ইন্টারপ্রিটার তৈরি করব, আমার নিজের স্ক্রিপ্টিং ভাষার জন্য। ভাষাটি হবে এবিসি প্রোগ্রামিং ভাষার উত্তরসূরি। আশা করছি ভাষাটি ইউনিক্স বা সি হ্যাকারদের আগ্রহ পাবে। প্রোগ্রামিং ভাষাটির নাম ঠিক করলাম পাইথন। মূলত মন্টি পাইথন ফ্লাইং সার্কাসের একজন বড় ভক্ত হওয়ার কারণেই এ রকম নাম ঠিক করলাম।

আরেকভাবে বলতে গেলে, পাইথন হলো একটি হাই-লেভেলইন্টারপ্রিটেডইন্টারেক্টিভ ও অবজেক্ট-অরিয়েন্টেড স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ। আমরা সি বা সি++ এর কথা হয়তো জানি, এগুলো কম্পাইলড ল্যাঙ্গুয়েজ। রান করার সময় কম্পাইলার পুরো কোড পড়ে, তারপর সেটাকে কম্পাইল করে। ফলে কোডের কোনো অংশে সামান্য একটা ভুল থাকলেই পুরো কোড বেকার হয়ে বসে থাকে, কাজ করে না। এদিক থেকে পাইথন একেবারেই আলাদা। পাইথন ইন্টারপ্রিটার লাইন-বাই-লাইন কোড পড়ে আর ইন্টারপ্রিট করে। আর যেখান থেকে ভুল খুঁজে পায় কেবল সেখান থেকেই কোড বেকার। আরেকটা কথা, ইন্টারপ্রিট করা মানে কিন্তু অনুবাদ করা। কিন্তু পাইথন ইন্টারপ্রিটার কোড কিসে অনুবাদ করে আর কার জন্যই বা অনুবাদ করে?

চিন্তার বিষয়! আসলে পাইথন ইন্টারপ্রিটার আমাদের জন্য কোড অনুবাদ করে না, করে কম্পিউটারের জন্য। কম্পিউটার একটা আজব জিনিস। ‘শূন্য’ ও ‘এক’ বাদে আর কিছু বোঝে না। বোকা কম্পিউটার! আমরা যা-ই লেখি না কেন ইন্টারপ্রিটার সেটাকে ‘শূন্য’ ও ‘এক’-এর কম্বিনেশনে অনুবাদ করে কম্পিউটারকে বোঝায় আমরা তাকে আসলে কী করতে বলছি। প্রোগ্রামিং মানে তো কম্পিউটারকে ইনস্ট্রাকশন দেওয়া। আর পাইথনের কল্যাণে সে কাজ এখন আরও সহজ। পাইথন কিন্তু একটা ডায়নামিক ল্যাঙ্গুয়েজও বটে। সি, সি++, জাভা এরা সবাই স্ট্যাটিক ল্যাঙ্গুয়েজ। এদের ক্ষেত্রে প্রোগ্রামারকে প্রতিটা ভেরিয়েবলের ডেটা টাইপ বলে দিতে হয়। পাইথনের ক্ষেত্রে এই ঝামেলা নেই। পাইথন নিজ থেকেই ডেটা টাইপ (Data type) বুঝে নেয়, যেমনটা রুবি আপু বুঝে নেয় (রুবি একটি ডায়নামিক ওপেনসোর্স প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকে একে রুবি আপু বলে ডাকে); পাইথনের সেলফ মেমোরি ম্যানেজমেন্ট একে করে তুলেছে অনন্য। আর তার পাশাপাশি হাইলি রিড্যাবল হওয়ায় পাইথন প্রোগ্রামারদের কাছে হয়ে উঠেছে প্রেমের ল্যাঙ্গুয়েজ।

পাইথন কেন? 

জার্নিক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কার্ট ফিন্স বলেন –

হিসাব করে দেখলাম যে পাইথন আমাদের প্রোগ্রামারদের জাভা প্রোগ্রামারদের চেয়ে ১০ গুণ বেশি এবং সি প্রোগ্রামারদের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি কর্মক্ষম করে তুলেছে।

আমরা প্রোগ্রামিং শিখব। এটা তো বেশ ভালো কথা। কিন্তু ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে কেন পাইথনকে বেছে নেব? কেন আমরা পাইথন শিখব? চলুন, দেখে নেওয়া যাক সেই কারণগুলো।

ওপেনসোর্স 

পাইথন ওপেনসোর্স। পাইথনে লেখা স্ক্রিপ্ট বা সফটওয়্যার আমরা বিনা বাধায় ডিস্ট্রিবিউট করতে পারি, এমনকি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতও করতে পারি। এই উদারতা পাইথনকে করেছে অনন্য।

জেনারেল-পার্পাজ ল্যাঙ্গুয়েজ 

পাইথন জেনারেল-পার্পাজ ল্যাঙ্গুয়েজ। অর্থাৎ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে করা যায় এ রকম প্রায় সবকিছুই পাইথন ব্যবহার করে করা যায়। আর সঠিক লাইব্রেরি বা টুল ব্যবহারের মাধ্যমে কাজটা অনেক সহজেই হয়ে যায়। পেশাগত দিক থেকে পাইথনকে ওয়েব প্রোগ্রামিং, গুই প্রোগ্রামিং, নেটওয়ার্ক প্রোগ্রামিং, সিস্টেম প্রোগ্রামিং, বিগ ডেটা, ডেটা মাইনিং, ডেটা অ্যানালাইসিস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সায়েন্টিফিক কম্পিউটিং মোটামুটি সব সেক্টরেই ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং দিন দিন এর চাহিদা বেড়েই চলছে।

বিগিনার ফ্রেন্ডলি 

পাইথন বিগিনার ফ্রেন্ডলি ল্যাঙ্গুয়েজ। এটাকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন পাইথন লেখা কোড সহজে বোঝা যায়। তাই পাইথন খুবই সহজবোধ্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। পাইথন কোড পড়া আর ইংরেজি পড়া একই জিনিস। মনেই হয় না যে এটা কোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। সে জন্য পাইথনে কোড লেখা বিনোদনেরই অপর নাম। একটা কাজের সাথে যখন বিনোদন যোগ হয়, তখন সেই কাজটা আমাদের মস্তিষ্ক অনেক দ্রুত গ্রহণ করতে পারে। এবং এ কারণেই বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাইথন দিয়েই প্রোগ্রামিং শেখানো শুরু হয়েছে। আর গিটহাবের বিভিন্ন প্রজেক্ট বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, পাইথন জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের মধ্যে তৃতীয়।

কমিউনিটি সাপোর্ট 

প্রোগ্রামিংয়ের জগতে পা দেওয়ার সাথে সাথে আমরা বুঝতে পারব এখানে কমিউনিটি সাপোর্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো একটা প্রোগ্রাম লিখলাম, আমাদের মনে হবে সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রান করার সময় দেখব, হয়তো সেই সমস্যা ঠিক করতে করতে তিন-চার রাত পার হয়ে যাবে। তাই কমিউনিটির কাছে ধরনা আমাদের দেওয়াই লাগবে। আসলে প্রোগ্রামিংয়ের অপর নাম হলো সাহায্য নেওয়া ও দেওয়া। আর এ ক্ষেত্রে পাইথন খুবই ভালো জায়গায় রয়েছে। কারণ পাইথনের রয়েছে পঞ্চম বৃহত্তম স্টাকওভারফ্লো কমিউনিটি। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কমিউনিটি মিট-আপ পাইথনেরই হয়।

ক্যারিয়ার 

স্টাকওভারফ্লো ডেভেলপার সার্ভে-২০১৬ অনুসারে, পাইথন হলো ষষ্ঠ জনপ্রিয় টেকনোলজি। চার বছর ধরেই পাইথন তার এই জায়গা দখল করে রয়েছে, এর জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বাড়ছেই। শুধু তা-ই নয়, মোস্ট ওয়ান্টেড প্রোগ্রামিং টেকনোলজির তালিকায় পাইথন রয়েছে ৩ নম্বরে। শীর্ষ টেকনোলজির তালিকায় পাইথন রয়েছে ৪ নম্বরে। বিভিন্ন সেক্টরে টপ পেয়িং টেকনোলজির তালিকায় পাইথন রয়েছে শীর্ষ দশের ভেতরেই।

জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইউটিউবের সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট কুয়ন দো (Cuong Do) বলেন –

পাইথন আমাদের সাইটের জন্য যথেষ্ট গতিময়। আমাদের অল্পসংখ্যক ডেভেলপার থাকা সত্ত্বেও এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের অতিপ্রয়োজনীয় ফিচারগুলো তৈরি করতে সহায়তা করে।

এখন দেখে নেব কোন কোন বিশ্বসেরা কোম্পানি পাইথন ব্যবহার করে। ফাইল হোস্টিং সাইট ড্রপবক্স পাইথন ব্যবহার করে। ড্রপবক্সের ডেক্সটপ ক্লায়েন্ট পাইথনে তৈরি। সবচেয়ে বড় চমক হলো, গুইডো ভ্যান রস্যিউম বর্তমানে ড্রপবক্সে কর্মরত রয়েছেন। ফেসবুকের ইনস্টাগ্রামেও রয়েছে পাইথনের ব্যবহার। ডিসকাস, পিন্টারেস্ট, কোরা, বিটবাকেট, রেড্ডিট, ডিগ সবগুলোই পাইথন দিয়ে তৈরি। মজিলা তাদের কিছু প্রজেক্টে পাইথন ব্যবহার করে, তা ছাড়া মজিলার অ্যাড-অন ও সাপোর্ট সাইট পাইথন দিয়ে তৈরি। খোদ গুগলই কিন্তু পাইথনের বিশাল ইউজার। ইউটিউব গড়ে উঠেছে পাইথনের ওপর ভর দিয়ে। অ্যাঞ্জেললিস্টের সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ দক্ষতাগুলোর তালিকায় পাইথন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে (অ্যাঞ্জেললিস্ট হলো স্টার্ট-আপ কোম্পানিগুলোর একটা প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এসব কোম্পানি জব অফার করে থাকে); আর পাইথন প্রোগ্রামারদেরই দেওয়া হয় সর্বোচ্চ পরিমাণ বেতন।

পাইথন ২ নাকি ৩? 

‘পাইথন-২’ মান্ধাতার আমলের জিনিস, ‘পাইথন-৩’ই বর্তমান এবং এই ভাষার ভবিষ্যৎ।

এতক্ষণে আমরা হয়তো বুঝতে পেরেছি যে খোলাবাজারে পাইথনের মেজর দুটি ভার্সন পাওয়া যায়– পাইথন-২ ও পাইথন-৩। পাইথন-২ নাকি ৩- এই প্রশ্নে মোটামুটি সব পাইথনিস্টই মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। সুখের বিষয় হলো, ভার্সন দুটির মধ্যে মেজর পার্থক্য খুবই কম। দুঃখের বিষয় হলো, বিগত ২০২০ সালে পাইথন-২-এর জীবনাবসান ঘটেছে। সুতরাং পাইথন-৩ হলো পাইথনের বর্তমান ও ভবিষ্যতের অবলম্বন। এখন কেউ পাইথন শেখা শুরু করলে তার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে পাইথন-৩ শেখা। যেহেতু পাইথন-৩ সর্বশেষ ল্যাঙ্গুয়েজ, তাই এটা শেখায় কোনো সমস্যা নেই। তা ছাড়া, এই বইয়ে আমরা পাইথন-৩ নিয়েই চিল্লাপাল্লা করব। আমাদের মধ্যে কেউ যদি একেবারেই মনস্থির করে ফেলেন যে পাইথন-২ই শিখবেন। তাহলে আর কী করার? যাহোক, ‘পাইথন-২’ ও ‘পাইথন-৩’-এর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের পাইথনের অফিশিয়াল উইকির এই ওয়েবলিংকটি দেখতে পারেন।

উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, নাকি লিনাক্স ডিস্ট্রো? 

আপাতদৃষ্টিতে প্ল্যাটফরম একটা সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। আমরা আমাদের সুবিধামতো যেকোনো একটা ব্যবহার করতে পারি। আমরা এই বইয়ে লিনাক্স ডিস্ট্রো (উবুন্টু) ব্যবহার করব। তাই সাজেস্ট করব সবাই লিনাক্সের (উবুন্টু-১৬.০৪ হলে ভালো হয়) কোনো ডিস্ট্রো ব্যবহার করুন। আসলে পাইথনে নিশ্চিন্তে প্রোগ্রামিং করার জন্য লিনাক্স একটা আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। তবে আপনি যদি উইন্ডোজ বা ম্যাকওএস ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে বদলানোর কোনো দরকার নেই। আপনার রানিং প্ল্যাটফর্মেই আপনি নিরিবিলি প্রোগ্রামিং করতে পারেন।

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে পাইথন একটি ইন্টারপ্রিটেড ল্যাঙ্গুয়েজ আর একে রান করানোর জন্য দরকার পাইথন ইন্টারপ্রিটার। তো এই ইন্টারপ্রিটার কই পাব?

না, না ভাই। এর জন্য খুব একটা চাপ নিতে হবে না আমাদের। পাইথনের www.python.org/downloads– এই ওয়েবসাইটে গেলেই দেখা মিলবে পাইথন ইন্টারপ্রিটারের। উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, লিনাক্স সব মেজর প্ল্যাটফর্মের জন্যই পাওয়া যাচ্ছে একেবারে বিনা মূল্যে। আমরা লেটেস্ট পাইথন-৩.x বিল্ডটা ব্যবহার করব। উল্লেখ্য, এই বইটা লেখার সময় পাইথন ৩.৯.৯ ব্যবহার করা হয়েছে। তবে আমরা চাইলে ৩.৪.x, ৩.৫.x, ৩.৬.x, ৩.৭.x যেকোনোটাই ব্যবহার করতে পারি, অসুবিধা নেই। তবে একেবারে লেটেস্টটা (অন্ততপক্ষে ৩.৯.x) ব্যবহার করাই উত্তম।

আমরা উইন্ডোজ ইউজার হলে ৩২-বিট বা ৬৪-বিট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় .exe ভার্সনটা ডাউনলোড করে নেব। ডাউনলোড শেষ হলে ফাইলের ওপর ডাবল ক্লিক করে ইনস্টলেশন প্রসেস শুরু করব। চোখের সামনে পাইথন সেটআপ উইন্ডো ওপেন হলে “Add Python 3 to PATH”-এ টিক দিয়ে দেব। তারপর নরমাল সফটওয়্যার ইনস্টল করার মতো করে “Install Now”-তে ক্লিক করে ইনস্টল করব।

ইনস্টলেশন প্রসেস শেষ হলে উইন্ডোজের কমান্ড প্রম্পট ওপেন করে python –V কমান্ড দিয়ে ভার্সন চেক করে দেখব।

পাইথন শেল, ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

All Apps > Python 3 > IDLE-এ গেলে আমরা পাইথনের IDLE পাব। IDLE সম্পর্কে একটু পরেই আমরা জানব।

পাইথন IDLE, ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

লিনাক্সের ক্ষেত্রে অলরেডি পাইথন-৩ ইনস্টল থাকার কথা। আমরা শুধু টার্মিনাল ওপেন করে কমান্ড দেব python3 আর দেখব পাইথন ইন্টারেক্টিভ শেল (সংক্ষেপে পাইথন শেল) ওপেন হয় কি না! হলে ঠিক আছে। না হলে প্রয়োজনীয় ইনস্টল কমান্ড দিয়ে ইনস্টল করে নেব। উবুন্টুর ক্ষেত্রে sudo apt-get install python3 python3-dev python3-pip কমান্ডটি দিলেই চলবে। ইনস্টল হয়ে গেলে টার্মিনাল ওপেন করে কমান্ড দেব python3 আর দেখব নিচের মতো পাইথন ইন্টারেক্টিভ শেল ওপেন হয়ে গেছে।

পাইথন শেল, উবুন্টু

ম্যাকেওএসের ক্ষেত্রে ৩২-বিট বা ৬৪-বিট অনুসারে .pkg ফাইলটা ডাউনলোড করে এর ওপর ডাবল ক্লিক করে ইনস্টলেশন প্রসেস শুরু করব। স্ক্রিনে ওপেন হওয়া গ্রাফিকার ইন্টারফেস ফলো করে পাইথন ইনস্টল করে ফেলব। তবে চাইলে শুধু টার্মিনালে বসেই আমরা পাইথন ইনস্টল করতে পারব।

এ জন্য প্রথমেই আমরা অ্যাপল স্টোর থেকে Xcode ইনস্টল করব। তারপর Xcode-এর কমান্ডলাইন টুলস ইনস্টল করার জন্য টার্মিনালে xcode-select –install কমান্ডটি দেব।

এর ফলে একটা পপ-আপ উইন্ডো ওপেন হবে। সেখান থেকে আমরা কমান্ড লাইন টুলস ইনস্টল করে নেব। এরপর আমরা Homebrew ইনস্টল করব। এ জন্য টার্মিনালে নিচের কমান্ডটা দেব:

$ /usr/bin/ruby -e "$(curl -fsSL https://raw.githubusercontent.com/Homebrew/install/master/install)"

বইয়ের ফরম্যাটিংয়ের কারণে ওপরের কমান্ডটা দুই-তিন লাইনে দেখাতে পারে। তবে কমান্ডটা এক লাইনেই হবে এবং https-এর আগে অবশ্যই একটি স্পেস হবে। যাহোক, ইনস্টলেশন শেষ হলে ~/.bash_profile ফাইলের একেবারে শেষে নিচের লাইনটা যোগ করে দেব –

$ export PATH=/usr/local/bin:$PATH

তারপর টার্মিনাল ক্লোজ করে আবার ওপেন করব। এবার পাইথন ইনস্টল করার জন্য কমান্ড দেব –

$ brew install python3

ইনস্টল শেষ হয়ে গেলে ভার্সন চেক করে দেখব।

$ python3 -version

কোড কোথায় লিখব? 

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কোড কোথায় লিখব? লিনাক্স ও ম্যাকওএসের ক্ষেত্রে টার্মিনাল ওপেন করে python3 কমান্ড দিই। পাইথন ইন্টারেক্টিভ শেল চালু হবে। উইন্ডোজের ক্ষেত্রে কমান্ড প্রম্পট (cmd) ওপেন করে কমান্ড দিই python; তাতেই দেখতে পাব একটা চমৎকার পাইথন ইন্টারেক্টিভ শেল চালু হয়ে গেছে। আমরা চাইলে আরেকটু সুন্দর জায়গায় প্রোগ্রামিং করার জন্য IDLE (ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লার্নিং এনভায়রনমেন্ট) ব্যবহার করতে পারি। এটা হলো পাইথনের বেসিক IDE (ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট); আপাততই কোনো বড়সড় IDE ব্যবহার করার দরকার নেই আমাদের। তবে একান্তই মন চাইলে Eclipse-এর সাথে PyDev প্লাগিন ইউজ করতে পারি। অথবা জেটব্রেইনসের PyCharm ব্যবহার করতে পারি। পাইচার্মের দুটি ভার্সন আছে। একটি কমিউনিটি এডিশন, যেটা ফ্রিতে পাওয়া যায়। আরেকটা হলো প্রো-ভার্সন, এটা ব্যবহার করতে পয়সা লাগে। তবে স্টুডেন্ট হলে ১ বছরের জন্য বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। যত দিন স্টুডেন্ট থাকবেন, তত দিন লাইসেন্স রিনিউ করে ফ্রিতেই ব্যবহার করা যায়। আর কোড এডিটরের কথা চিন্তা করলে AtomVisual Studio Code (VSCode) আর Sublime Text-এর কথাই বলতে হবে। প্রথম দুটি ওপেনসোর্সও ফ্রি, শেষেরটার লাইসেন্স পয়সা দিয়ে কিনতে হবে আমাদের।

ধরা যাক, যেকোনো একটা কোড এডিটরে test.py ফাইলে কিছু পাইথন কোড লিখলাম। পাইথন ফাইলের শেষে সব সময় .py থাকবে। যাহোক, এখন test.py ফাইলটা রান করার জন্য টার্মিনালে (ফাইলটা যে ডিরেক্টরিতে আছে, সেখানে ঢোকার পর) কমান্ড দেব –

$ python3 test.py

তাহলেই এই ফাইলে থাকা কোড এক্সিকিউট হয়ে আউটপুট দেখাবে আমাদের।

অবশ্য, আমরা চাইলে এত হাঙ্গামা না করে সরাসরি অনলাইনেই আমাদের প্রোগ্রাম রান করতে পারি। (চমৎকার দুটি অনলাইন কোড এডিটর –

আমরা এই বইয়ের প্রথম দিকের কয়েকটা চ্যাপ্টারে কমান্ড লাইন বা টার্মিনালে পাইথন ইন্টারেক্টিভ শেল ব্যবহার করে প্রোগ্রামিং করব। তবে কেউ চাইলে IDLE-এর পাইথন শেলটাও ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু কয়েকটা চ্যাপ্টারের পর থেকে যখন আমাদের তুলনামূলকভাবে বড় বড় প্রোগ্রাম লিখতে হবে, তখন থেকে আমরা IDLE ব্যবহার করব। তবে এবার আর শেল নয়। File থেকে New File-এ যাব। নতুন একটা ফাইল ওপেন হবে। এই ফাইলেই আমরা কোড লিখব। কোড লেখা শেষ হলে File থেকে Save-এ গিয়ে ফাইলটা সেভ করব। প্রয়োজনবোধে ফাইল সেভ করার সময় ফাইলের নামের শেষে .py এক্সটেনশন দেব। আর সবশেষে Run থেকে Run Module ক্লিক করে প্রোগ্রাম রান করাব। এ ক্ষেত্রে নতুন একটা উইন্ডো ওপেন হয়ে আউটপুট দেখাবে। পরে চাইলে এই নতুন উইন্ডোটা আমরা ক্লোজ করে দিতে পারি।

ভাল লাগলে ব্লগটি শেয়ার করুন-
Suhanur Rahman
Suhanur Rahman

আমি কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রোগ্রামিং এবং ডেটা সায়েন্স নিয়ে গভীর আগ্রহী। আমি নিয়মিতভাবে নতুন কিছু শিখছি এবং আমার দক্ষতাগুলি বৃদ্ধি করতে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করছি, যাতে ইম্প্যাক্টফুল অবদান রাখতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *