রিমোট জব কী, কেন, কীভাবে?

রিমোট জবঃ কী, কেন, কীভাবে?

আচ্ছা কেমন হয়, যদি আপনি আপনার বাসাকে একটি অফিস বানিয়ে ফেলেন, কিংবা আপনি দূর কোথাও ভ্রমনে যাচ্ছেন ট্রেনে বসে ছোট ছোট কাজগুলা করে ফেলতে পারছেন কিংবা সমূদ্রের পাশে কোন এক পাহাড়ে বসে নিজের অফিসের কাজ করে ফেলতে পারছেন? খুব ভাল হবে তাইতো?

জ্বি, এটাই রিমোট জব। যেখানে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ন মিটিং সহ, বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন যেকোন যায়গা থেকে।

সময়ের সাথে সাথে রিমোট জবের পরিধি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা সময় ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে রিমোট জবকে গুলিয়ে ফেলা হত। এখন এই ধারনা অনেকটাই পালটেছে। এখন প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলা ঝুকছে রিমোট জবের দিকে যেখানে তাদের অফিস খরচ, এমপ্লয়িদের আসা-যাওয়া প্যারা সহ অনেক কিছু বেচে যাচ্ছে সুতরাং বলা যায় সময়ের সাথে সাথে রিমোট জব বিস্তার লাভ করছে।

আসুন, জেনে নিই রিমোট জব সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য

রিমোট জব কীভাবে করে?

রিমোট জব হচ্ছে “দূরবর্তী কাজ” অর্থাৎ এমন একটি চাকরি, যেটা অফিসের কাজের জন্য বাসার বাহিরে না গিয়ে বরং বাসায় বসে অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করার অনুমতি দেয়। অন্যান্য চাকরিগুলোতে যেমন নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা, যে কোন সময় থেকে কোন সময় অফিসে যেতে হবে ঠিক তেমনি রিমোট জবেও সময় নির্ধারিত থাকে। প্রয়োজনীয় মিটিং সহ অন্যান তথ্য আদান প্রধান অনলাইনে গুগল মিট অথবা জুমের মাধ্যমে করা হয়। এক কথা অফিসের কাজ বাসায় বসে করা হয়। কিছু কিছু রিমোট জবে আবার ভিন্নতা আছে যেখানে আপনাকে কয়েক ঘণ্টার জন্য অফিসে যেতে বলা হয়, বাকি কাজ বাসায় বসে করা যায়।

কি কি চাকরি রিমোট জবের মধ্যে পড়ে?

বিভিন্ন প্রকার রিমোট জব হয়ে থাকে যেমনঃ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ডেভেলপার, গ্রাফিক ডিজাইনার, কাস্টমার সার্ভিস জব, ডাটা এন্ট্রি, কোডিং এবং ট্রান্সক্রিপশন জব, রাইটার, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার ইত্যাদি সহ নানা ধরনের জব রয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন -   সি প্রোগ্রামিং না পাইথন? কোন ভাষা ভালো এবং শেখার জন্য উপযোগী?

কেন করবেন রিমোট জব বা এর উপকারিতা কি?

  • সময়ের সদ্ব্যবহার করা: রিমোট জব যেহেতু বাসায় বসে করা যায় সেক্ষেত্রে যাতায়াতের প্রয়োজন পড়ে না, যার ফলে অনেকটা সময় বেচেঁ যায়। এই সময়টিকে বিভিন্ন প্রডাক্টিভ কাজে ব্যবহার করা যায়।
  • নারীদের জন্য রিমোট জব বেশ কার্যকর এবং সুরক্ষিত: যারা গৃহিণী কিংবা বাসা থেকে বের হতে সমস্যার সম্মুখীন হন, তাদের জন্য রিমোট জব খুব কার্যকরী। কারণ, ঘর থেকে বের না হয়ে তারা অর্থ উপার্জন করতে পারবে।
  • রিমোট জবের মাধ্যমে ফ্লেক্সিবেল লাইফ লিড করা যায়অন্যান্য চাকরিতে অফিসের নির্ধারিত সময়ের বাহিরে যাতায়াত ক্ষেত্রে বেশ সময় ব্যয় হয়। কারণ, রাস্তাঘাটে ট্রাফিক, বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব এসব বেশ সময় নিয়ে নেয়। এতে পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের সময় দেয়া হয়ে উঠে না। কিন্তু, রিমোট জবে এই অতিরিক্ত সময়গুলো ব্যয় হয় না। ফলে কাজের বাহিরে নিজের ব্যক্তিগত জীবনে সবাইকে সময় দেয়া যায়।
  • টাকা ব্যয় কম হয়, ফলে মাসে মোটামোটি টাকা সঞ্চয় প্রতিদিন কিংবা সাপ্তাহে যে কয়দিন অফিস থাকে, তাতে অফিসে যাওয়া আবার বাসায় ফেরত আসায় যাতায়াত খরচ হয়। যা রিমোট জবে হয় না। যেহেতু অফিসে যেতে হচ্ছে না তাই যাতায়াত খরচও হচ্ছে না। ফলে মাসে মাসে কিছু টাকা ব্যয় কম হচ্ছে।
রিমোট জব পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে সেই বিষয়গুলো এগিয়ে রাখবে, চলুন সেই সম্পর্কে কিছু জানা যাক

রিমোট জবের ক্ষেত্রে কি কি স্কিলস বা দক্ষতা থাকা প্রয়োজন?


প্রথমত দরকার আত্মবিশ্বাস, মৌখিক যোগাযোগ (oral communication), রাইটিং, এ দুটি কাজে নিখুঁত হতে হবে, ডিজিটাল প্রযুক্তি বা “google tool” সঠিকভাবে পরিচালনা করা জানতে হবে। যেমন: zoom , google meet, সমস্যা সমাধান (problem solving) স্কিল নিখুঁত হতে হবে এবং সৃজনশীল দক্ষতা থাকতে হবে।

আর আপনার উপরে রিমোট জবের মধ্যে পড়ে এমন যেকোন একটা স্কিল ভাল ভাবে শিখতে ও আয়ত্ব করতে হবে।

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন -   বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের ১০ সফটওয়্যার

রিমুট জব আবেদন করতে কি কি লাগবে ?

  • সিভিঃ ভাল মানের একটি সিভি যেকোন জবের ক্ষেত্রে প্রয়োজন। রিমোট জবের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই
  • স্কিলঃ এটা নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সেভাবে একটি স্কিল আয়ত্ব করতে পারেন।
  • এপ্লিকেশন প্রসেসঃ খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয়। ভালভাবে আবেদন করতে না পারলে কোন চাকরি থেকেই সারা পাওয়া যায় না। সুতারং এখানে তা ভালভাবে করতে হবে।

কোথা থেকে পাবেন রিমোট জব?

ফেসবুক, টুইটার সহ লিংকড ইন খুবই জনপ্রিয় সোসিয়াল মিডিয়া প্লাটফর্ম যেখানে ভাল রিমোট জব পাওয়া সম্ভব। এছাড়া শুধু জবের জন্য রয়েছে, Indeed, Glassdoor, RemoteHub, Angellist সহ বিশ্বের বিভিন্ন সাইট, যেখান থেকে খুব সহজে রিমোট জবে এপ্লাই করা যায়।

সর্বশেষ জেনে নিই ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে রিমোট জবের কি পার্থক্য আছে?

কাজের ধরনঃ ঘরে বসে কোন কোম্পানি অথবা কোন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক ফুলটাইম কাজ করেন তাহলে সেটাকে রিমোট জব বলা হয়। অপরদিকে কোন ক্লায়েন্টের নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়ার মধ্যে যেকোনো কাজ করে দেওয়া হল ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং এর অর্থ হলো মুক্তপেশা আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন।

এ ছাড়াও ডিল বা চুক্তি চাকরি নিশ্চিয়তা, পেমেন্ট সিস্টেম সহ নানা পার্থক্য থাকে ফ্রিল্যান্সিং ও রিমুট জবের ক্ষেত্রে।

লিখনে - প্রোগ্রামিং হিরো ব্লগ
ভাল লাগলে ব্লগটি শেয়ার করুন-
Suhanur Rahman
Suhanur Rahman

সোহানুর রহামান, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ওয়েব-ডেভেলপার। ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং বিল্ডিং এবং কাস্টমাইজেশনে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা আছে। এছাড়াও - ওয়ার্ডপ্রেস, জাভা, HTML5, CSS3, PHP, JavaScript, অ্যাডোব ফটোশপ -এ সমৃদ্ধ জ্ঞান রয়েছে। 

Articles: 34

Newsletter Updates

Enter your email address below to subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *